বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:২৬ অপরাহ্ন
খুলনা প্রতিনিধিঃ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ আজ বুধবার সকালে কবর থেকে উত্তোলন করা হবে। কুষ্টিয়ায় গ্রামের বাড়িতে তার লাশ দাফন করা হয়।
এদিকে, মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও ১০ দিন সময় নিয়েছে। শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করার বিষয়টি আলোচিত হলেও এখনও মামলা হয়নি। পরিবার নাকি কুয়েট কর্তৃপক্ষ মামলা করবে সেই সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত হয়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খুলনার খানজাহান আলী থানার ওসি প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানান, শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় গত ৪ ডিসেম্বর থানায় একটি জিডি করা হয়। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করার জন্য গত ৫ ডিসেম্বর খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়। জেলা প্রশাসক ১৩ ডিসেম্বর লাশ উত্তোলনের অনুমতি দেন। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার খানজাহান আলী থানা পুলিশের একটি টিম কুষ্টিয়ায় গেছে। মঙ্গলবার বিকেলে তার মরদেহ উত্তোলন করার কথা থাকলেও সন্ধ্যা হওয়ায় বুধবার সকালে মরদেহ উত্তোলন এবং এরপর ময়না তদন্ত করা হবে।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত হয়ে যাওয়ার কারণে তারা লাশ উত্তোলন করেননি। এ কারণে বুধবার লাশ উত্তোলন করা হবে।
এর আগে কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমাদ জানান, সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম ও হলগুলো ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে তারা তদন্ত সম্পন্ন করতে পারেননি। সে কারণে তারা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আরও ১০ দিন ক্যাম্পাস বন্ধ রাখার সুপারিশ করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ১২ ডিসেম্বর রাতে সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাস ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তারাও তদন্তের জন্য আরও ১০ দিন সময় পেয়েছেন। তবে ২৩ ডিসেম্বরের আগেই তারা তদন্ত সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির একজন সদস্য জানান, যারা অভিযুক্ত, অভিযুক্ত ছাড়া প্রত্যক্ষদর্শী এবং সংশ্লিষ্ট, তাদেরকে চিঠি দিয়ে বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে। কমিটির সদস্যরা ড. সেলিমের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছেন।
এদিকে ড. সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। ড. সেলিমের স্ত্রী সাবিনা খাতুন বলেন, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। শিশু কন্যাকে নিয়ে কোথায় যাবেন, কী করবেন? তার নিরাপত্তা নেই। তিনি চান কুয়েট কর্তৃপক্ষ মামলা করুক। বিষয়টি ইতোমধ্যে তিনি শিক্ষক সমিতির মাধ্যমে কুয়েট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কুয়েটের জনসংযোগ ও তথ্য শাখার মুখপাত্র রবিউল ইসলাম সোহাগ বলেন, মামলার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
প্রসঙ্গত, কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান তার মনোনীত ছাত্রকে সম্প্রতি লালন শাহ হলের ডাইনিং ম্যানেজার নিযুক্ত করার জন্য হলের প্রভোস্ট ড. সেলিমকে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ৩০ নভেম্বর সেজান ৪০-৪২ জন নেতাকর্মীকে নিয়ে আবারও ড. সেলিমকে চাপ প্রয়োগ এবং তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে বাসায় গিয়ে হার্ট অ্যাটাকে ড. সেলিমের মৃত্যু হয় বলে তার পরিবারের অভিযোগ।